গীতালি সেন
প্রথম পর্ব
সার্থক মোটামুটি সাড়ে তিন বছর কাটিয়ে দিল পুনেতে । ক্যাম্পসিং-এ পাওয়া কোম্পানী টা যদিও ভাল ছিল তবুও বন্ডের জন্যই দুবছরের জায়গায় প্রায় আড়াই বছর ওটাকে টানতে হল। তারপর ভাল কোম্পানীতে চাকরি খুঁজে নিতে নিতে আরও ছ’মাস। ইতিমধ্যে ছোটোপিসির ছেলে স্বস্তিক ও সিভিল করে এসে জুটেছে এখানেই। ব্যস, দুই ভাইকে আর পায় কে! উইক এন্ডে ওদের দুটোকে দেখলে মনে হবে ওরা আবার ওদের সেই ছোটবেলাতেই ফিরে গেছে। এমনকি কোন শনিবারে স্বস্তিকের সাইট ভিজিটিং থাকলে সার্থকও ওর সাথে সাথেই বাইক নিয়ে সাইটে ঘুরতে থাকে। অফিসিয়াল সাইট ভিজিটিং-এর সাথে সাথেই চলতে থাকে ওদের নিজস্ব সাইট ভিজিটিং, সাথে পছন্দমত রেস্তরাঁয় খাওয়া-দাওয়া। অফিস থেকে তো কোন পাহারাদার সঙ্গে থাকে না, ঠিক সময়ে ওয়র্ক রিপোর্টটা পেশ করতে পারলেই হল। এভাবেই আবার শনিবারে স্বস্তিক সকাল সকালই চলে আসে সার্থকের ফ্ল্যাটে । ঘরে এটা ওটা নাড়াচাড়া করতে করতে চালাতে থাকে টুকটাক খাওয়া। ল্যাপটপ খুলে চলতে থাকে পাবজি গেম খেলা। যাই হোক এইভাবে পাঁচটা অবধি কাটিয়ে দুই ভাই এবার বেরিয়ে পড়ে পুণে শহরে চক্কর কাটতে। শহরের যে কোন জায়গাতেই তখন ওদের দেখা যেতে পারে ।
এইরকম করতে করতেই একদিন ওরা ভ্যাবাচাকা খেযে গেছিল। সে আর এক গল্প। আসলে সেবার হয়েছিল কি, সারা সপ্তাহ ধরে সার্থক আর স্বস্তিক ঠিক করেছিল রবিবারে নয়, শনিবারই দেখতে যাবে শনিবারওয়াড়া । কিন্তু শেষ মুহূর্তে সার্থকের সহপাঠী রাজিন্দর জানল মুঙ্গের থেকে তার বাবা এসেছেন। তিনি সার্থকের সাথে দেখা করতে চান। রাজিন্দরও সার্থকের সাথে একই সঙ্গে পুনেতে এসেছে চাকরি করতে। কলেজে পড়াকালীন বাড়ি দূরে বলে রাজিন্দর অনেকবার সার্থকের বাড়িতে গিয়ে থেকেছে। আন্টির হাতের রান্না রজিন্দরের খুব ভালো লেগেছে । রজিন্দরের বাবা তার কাছে সার্থকের কথা অনেক শুনেছেন। তাই তিনি তাকে দেখতে চান । সাথে সাথে সার্থক বলেছিল,
-তুই আঙ্কেলকে নিয়ে বারোটার মধ্যে আমার এখানে চলে আয়। আঙ্কেল আজ আমদের সাথে লাঞ্চ করবেন।
-পর, মেরে পাপা তো...
-বিলকুল শাকাহারী। তাই তো? কোন অসুবিধা নেই। আমার ডাব্বেওয়ালী আন্টি এটা দারুণ মেনটেইন করে। মা এখানে এসে নীলষষ্ঠী করেছিল। তাতেই কোন অসুবিধা হয়নি আর আঙ্কেল তো তবু পিঁয়াজ রসুন খান।
যাই হোক, রাজিন্দর ওর বাবাকে নিয়ে দুপুর দুটো নাগাদ খাওয়া-দাওয়া করে বেরিয়ে যেতেই দুই ভাই-এর দুয়ারে প্রস্তুত ক্যাব। ওদের নিয়ে ক্যাব এগিয়ে চলল রহস্যপুরী শনিবারওয়াড়ার দিকে। না জানি কি অপেক্ষা করে আছে ওদের জন্য সেখানে?
Комментарии