গীতালি সেন
-এ: চাদরটা আজ কতদিন হল পাতা হচ্ছে? কেন কাচতে দাওনি কেন?
ভয়ে সিঁটিয়ে যায় রিনি । ঠিক ঠিক উত্তর দিতেও পারে না।
-তাকের এই পুতুল গুলোতে ঝুলটা তুমি দেখতে পাও না। না? কি যে কর সারাদিন!
এভাবেই চলছে আজ কবছর। রিনির মনে পড়ে বিয়ের পরে সেই বিকেল গুলো।সারা ঘর সুন্দর করে গুছিয়ে নিজের সাজ আর আগ্রহ নিয়ে সেই অপেক্ষা । চা আর নতুনত্ব সব টিফিন । বরুণ আসার পর এক একদিন ঘুরতে যাওয়া , এটা ওটা কেনা, ভালোবাসা আর গল্প-হাসির মধ্য দিয়ে সুন্দর হয়ে ওঠা।
কিন্তু হঠাৎ কি যে হল, রিনি অনেক জিজ্ঞাসা করেছে।কিন্তু উত্তরের বদলে বরুণের মেজাজ চড়েছে দিন কে দিন। ছেলে ছোট থাকার সময়ে প্রথমে তবু মেনে নিলেও কিছুদিন পর থেকেই বরুণ শুরু করেছিল,
-ছোট ছেলে তো ঘর নোংরা করবেই। কিন্তু তুমি কী কর? সামলাতে পারো না ছেলেটাকে?
করত রিনি। যথেষ্টই করত। মানুষটা সারাদিন খেটেখুটে আসে। ওর তো একটাই প্যাশন- এই ঘর। কিন্তু না। যতভাবেই গুছিয়ে রাখো ঠিক কিছু না কিছু বার করে সেই খিটিরমিটির । তাই বিকেল হলেই আতংক আজকাল ।
আজ হঠাৎ ফোন
-রিনি, গাড়ি কিছুতেই ষ্টা র্ট নিচ্ছে না।
-ওমা সেকি!
-আরে বিক্রম আমাকে আগেই বলেছিল ক্লাচ- প্লেটটা চেঞ্জ করতে। বলছে নাকি এই জন্যই এই প্রবলেম হচ্ছে। সে তো অনেক ব্যাপার । এদিকে বিক্রম আবার অন্য একটা গাড়ি খুলেছে। তিন ঘন্টার আগে হবে বলে তো মনে হচ্ছে না।
-কি আর বলবো, খেয়ে নিও কিছু।
-ডোন্ট ওরি ।
ও: মুক্তি মুক্তি আপাতত তিন ঘন্টার। তাই বা কবে পেয়েছে। কত বছর হয়ে গেল । কী করবে সে এখন? রিনি ভাবে সে কি ছোটবেলার সেই নাচটা নাচবে ‘ হ্র্রদয় আমার নাচেরে আজিকে’ না কি দুটো ঘর পেরিয়ে রণিতার সাথে গল্প করে আসবে কিছুক্ষণের জন্য , চা বানিয়ে খাবে কিংবা স্ট্রিটের মাথায় ফুচকা; নাকি বুকানের সাথে মাঠে গিয়ে ওর বন্ধুদের সঙ্গে খেলবে? না গান শুনবে --- কি --- কি --- কি? না: আজ রাতের খাবারে বরুণের পছ্ন্দের একটা ডিশ বনাতেই হবে।
Opmerkingen